About Us

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
ভুমিকা
নাহমাদুহ ওয়া নুসল্লী আ’লা রসূলিহিল কারীম আম্মা বা’দ  
বস্তুত ইলমে ওয়াহী ও উলুম নব্যুতই ইলম হিসেবে আখ্যায়িত হওয়ার যোগ্য। এই ইলমই পারে তমসাচ্ছন্ন অন্ধকারে ঘেরা মানব সমাজকে আলোকজ্জল মুক্তির রাজপথে উঠিয়ে নিয়ে আসতে, সভ্যতার আলো ঝলমল নগরী পৌছে দিতে। এই ইল্ম এবং তদানুযায়ী আমলই মানুষকে পরিণত করে প্রকৃত মানুষে। মানুষের মাঝে জাগিয়ে তোলে মানবতাবোধ। মানুষের মধ্যকার হায়ওয়ানিয়াত ও পশু প্রবৃত্তিকে খতম করে তাকে করে তুলে উম্মুখ পারা। জাগতিক মোহমায়ার অক্টোপাস ছিন্ন করে মানুষ তখন ছুটে চলে আসে জান্নাত প্রাপ্তির অনাবিল প্রত্যাশা নিয়ে।  সেই চেতনা সমৃদ্ধ মানুষই ইহজগতে রচনা করতে পারে অনাবিল এক জান্নাতী পরিবেশ। দিন যায় কথা থাকে। এই পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে হাজারো অভিনেতার আবির্ভাব ঘটেছে। পৃথিবীর আদি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সমস্ত মানবকুল শিরোমনি হলে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (স)। যার ভূয়্যসী প্রশংসা স্বয়ং আল্লাহ পাক পবিত্র আল কুরআনে উল্লেখ করেছেন। সম সাময়িক সময়ে পৃথিবীর সমস্ত ঈমান বিধ্বংসী নেতাগণের নিকটও তিনি সর্ব কালের সর্ব যুগের সহস্র শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ নেতার আসনে আদিষ্ট হয়েছেন। তাদের হৃদয়ের মনি-কোটায় স্থান করে নিয়েছেন। আসলে সুশিক্ষিত লোক মানেই হল স্বশিক্ষিত। শিক্ষা এবং দীক্ষার এমন কোন স্তর নেই যেখানে নবী করীম (স) এর পদচারনা ছিল না। আর থাকবেই না কেন? মহানবী (স) ছিলেন মানবকুল শিরোমনির সর্ব শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। যাঁর ওস্দাত ছিলেন স্বয়ং মহান আল্লহ পাক নিজেই। আর তাই মহানবী (স) তাঁর প্রিয় সাহাবাদেরকে শিক্ষা দিয়ে জান্নাতী পরিবেশ জিনদাহ করেগেছেন, যা আমরা ইতিহাস তথা আল হাদীস আল কুরআন হতে তা মেনে নিয়েছি। তাই সাহায়ে কেরামের যুগ থেকে এই ইলম ধারণ বহন, প্রচার ও প্রসারের প্রানান্ততকর প্রয়াস চলে আসছে। উলামায়ে উম্মত, ফুকাহা, মুজাদ্দেদীন, মুহাদ্দিসীণ ও সুলাহায়ে উম্মত অত্যন্ত বিশ্বস্ততা, বিচক্ষণতা, ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরলস সাধনার মাধ্যমে এই ইলমের যথাযথ হিফাজত ও ই শা’আতের কাজ আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। বাতিলের রক্ত চক্ষু, শয়তানিয়াতের ঔদ্ধত্যপূর্ণ অহংকার, ক্ষমতাসীনদের নির্যাতন, কুচক্রীদের প্রলোভন, জাগতিক ভোগ বিলাসের মোহ কোন কিছুই তাদেরকে আপন কর্তব্য থেকে সামান্যতম বিচ্যুত করতে পারেনি।
  

ঠিক এমনই এক ক্ষণ জন্মা ও আধ্যাতিক নেতা ছিলেন হযরত মাওঃ সৈয়দ মুহা. ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.) তিনি উল্লেখিত অবস্থার একজন বিশিষ্ট এবং একনিষ্ঠ গবেষক ছিলেন। তিনি নাস্তিক্যবাদী ধর্মহীন শিক্ষার প্রভাব থেকে মানবকুলকে সঠিক আলোর দিশারী অথ্যাৎ জান্নাত ওয়ালা পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কল্যাণে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড গঠন করেন। যা সর্বস্তরের মানুষের জন্য সুশিক্ষা ও দীক্ষা অর্জনের এক অভিনব পন্থা। সমাজের এমন কোন স্তর নেই যেখানে এ বোর্ডের কার্যক্রম অর্থাৎ লক্ষ্য উদ্দেশ্য স্পর্শ করেনি। তাই পিল পিল পায়ে এ বোর্ডের কার্যক্রম আশাতীত ভাবে এগিয়ে চলেছে। আর এ কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন একটি সুক্ষ্ম এবং সহজ সরল ও ফলপ্রসু নীতিমালা। আর এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড বয়স্ক ছবাহী, কিরায়াতুল কুরআন (আম,খাছ) অর্থাৎ (প্রাথমিক শিক্ষা) জুনিয়র, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চতর শিক্ষা ইফতা ও গবেষণা বিভাগসহ প্রশাসন কাঠামো এ নীতিমালায় সন্নিবেশ ঘটেছে। আশা করা যায় বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের এ গঠনতন্ত্র ও নীতিমালা অনুসরণ করে চললে সমাজ থেকে কুফরী শিক্ষা দূর হয়ে জান্নাতওয়ালা সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। জাতি পাবে মুক্তি, পাবে আলোর দিশারী, সমাজ হবে আদর্শ, দেশও পৃথিবী হবে আলোকময়। তবু অসাবধানতায় কিছু কিছু ভুল এ গঠনতন্ত্রে ও নীতিমালায় থাকতে পারে।পাঠকের দৃষ্টিগোচর হলে অত্র বোর্ডে জানানোর জন্য অনুরোধ রইল। সংস্কারের অপেক্ষায় আমরা সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। ইনশা আল্লাহ।
আশা করি, এসব সমস্যাকে কাটিয়ে উঠার ও ধর্মীয় শিক্ষাকে একটি অভিন্ন খাতে পরিচালিত করার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি সমন্বিত প্রয়াস ও সার্বজনীন উদ্যোগের।   এ গঠনতন্ত্র ও নীতিমালা তারই একটি দর্পন স্বরূপ। আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.) স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামে ৬৮ হাজার কুরআনী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যকে মাথায় রেখে এ গঠনতন্ত্র ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো। আলহামদুলিল্লাহ। বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড-এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী সামনে রেখে দ্রুত অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মহান আল্লাহ তায়ালা হযরত পীর সাহেব (রহ.) এর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করত: উক্ত শিক্ষা বোর্ডকে দ্বীনের জন্য কবুল করেন। আমীন-ছুম্মা আমীন।